শার্শায় গাড়ি চাপায় পা হারানো স্কুলছাত্রীর চিকিৎসায় অর্থ প্রয়োজন

এবিসি নিউজ: যশোর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শার নাভারণে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারানো স্কুল ছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত নিপার বাম পায়ের অবস্থাও ভাল না। যশোর আড়াইশ বেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেধাবী ছাত্রী নিপা সারাক্ষণ এই দু:শ্চিন্তায় দিন পার করছে। মেয়ের মতো অস্থির তার পিতা-মাতাও। পড়ুন>>>যশোরে সড়ক দুর্ঘটায় ছাত্রীর দেহ থেকে পা বিছিন্ন
গত ১৭ দিন গোটা পরিবার মেয়ের সাথে হাসপাতালে চরম এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন-রাত পার করছেন। এখন তার আরও বেশ কয়েকটি অপারেশনে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।
গত ২০ মার্চ স্কুল যাওয়ার পথে পল্লী বিদ্যুতের একটি পিকআপ গাড়ির চাপায় গুরুতর আহত হয় নিপা। হাসপাতালে ভর্তি করলে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়। মিফতাহুল জান্নাত নিপা শার্শার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মাতা মুসলিমা বেগমের সন্তান। তাদের চার বছরের মুনতাকিম রাফি নামে পুত্র সন্তান আছে। নিপা বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। সড়ক দুর্ঘটনার কিছুদিন পরে প্রকাশিত পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়। সে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছে।
এদিকে নিপার চিকিৎসায় অর্থাভাব দেখা দিয়েছে। আগামী মঙ্গলবার ডান হাতের অপারেশন এবং এর এক সপ্তাহ পর চিকিৎসকরা নিপার বাম পায়ের গুড়ালি অপারেশন করার পরিকল্পনা করেছেন। এখানে গুড়ালি ঠিক করা সম্ভব না হলে ঢাকা পঙ্গু বা ভারতে মেয়েকে নেওয়া লাগতে পারে বলে নিপার পিতা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম পা লাগাতে গেয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা বা তার থেকে বেশি টাকা লাগতে পারে। যা তার পিতার পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব না। যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার খরচসহ সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও সে ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী পরিবারটির হতাশা কাটছে না।
নিপার মা মুসলিমা বেগম বলেন, মেয়ের বাবা একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবারের তেমন কোন সম্পদ নেই। তার পক্ষে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য এত টাকা জোগাড় করা কঠিন। ঘটনার দিন যশোরের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। আগামীতে চিকিৎসা খরচসহ সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এ বাদেও যশোরের স্বার্থহীন সামাজিক সংগঠন (এসএস ফাউন্ডেশন) ত্রিশ হাজার টাকা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভর্তির পর থেকে ওষুধসহ বিভিন্ন খরচ বাবদ এক লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে।
হাসপাতালে মেয়ের শয্যার পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিপার বাবা বলেন, মেয়ের ভবিষ্যত কি হবে? পরিবারের সকল সুখ, শান্তি কেড়ে নিয়েছে ঘাতক পিকআপ। অথচ প্রশাসন এখনও সে গাড়ির চালককে আটক করতে পারিনি। তিনি সরকারের কাছে মেয়ের উন্নত চিকিৎসা ও চালকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
হাসপাতালের অর্থো সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, নিপার ডান পা কাটার পরে ক্ষত শুকাতে শুরু করেছে। আগামী মঙ্গলবার তার ডান হাতের অপারেশন করা হবে। এর পরে নিপার শারীরিক অবস্থা দেখে পরের সপ্তাহে বা তারও কিছুদিন পর বাম পায়ের গুড়ালি অপারেশন করার চেষ্টা করবেন। গুড়ালির অবস্থা ভালো থাকলে অপারেশন করা সম্ভব হবে। তা না হলে ঢাকা পঙ্গু অথবা ভারতে নিয়ে অপারেশন করাতে হবে।
চিকিৎসকদের এসব শুনে নিপার পরিবার মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। তারা সমাজের বিত্তবান, যশোর জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর সুবিবেচনা কামনা করেছেন।
খুলনা বিভাগ