র‌্যাগিং ও যৌন নিপীড়ন অপরাধে যবিপ্রবির ৯ ছাত্র বহিষ্কার

এবিসি বাংলা ডেস্কএবিসি বাংলা ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:36 PM, 12 March 2019

স্টাফ রিপোটর, চৌগাছা: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনচারে বাধ্য করার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুইজনকে আজীবন, একজনকে দুই বছর এবং অপর ৬জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যবিপ্রবির জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পড়ুন>>>যশোরের নওয়াপাড়ায় ডুবলো কয়লা বোঝাই কার্গেো

মঙ্গলবার দুপুরে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সবাই যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীবের স্বাক্ষরিত এক অফিসে আদেশে তাদের বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আরও পড়ুন>>>ছাত্রলীগ গুজবের সংগঠন-মন্তব্য ডাকসুর ভিপি নুরুর

এতে জানানো হয়, র‌্যাগিং, যৌন নিপীড়ন এবং বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান। একইসঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গেও তদন্ত কমিটি কথা বলেন। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্ররা তদন্ত কমিটির সঙ্গে অসংলগ্ন, ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেন এবং তদন্ত কমিটি দেখেন যে র‌্যাগিংয়ে জড়িত ছাত্ররা তাদের অপরাধের বিষয়ে অনুতাপ বা দুঃখ প্রকাশ করেনি।
একইসঙ্গে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র‌্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়। এ সংক্রান্ত ফোনকলের রেকর্ড তদন্ত কমিটির হাতে রয়েছে।

এছাড়া র‌্যাগিংয়ের শিকার হওয়া একজন ছাত্র ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং স্বাভাবিক হতে পারছেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র‌্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেন। এর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আচরণবিধির ৩ এর (এ ও বি) অনুযায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
অফিস আদেশ অনুযায়ি আজীবন বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্ররা হলেন- দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অলি উল্লাহ (রোল-১৭১৩১২) ও মাহমুদুল হাসান (রোল-১৭১৩৩৪); দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রজিবুল হক রজব (রোল-১৫১৩৩০); এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন- চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবদুল কাদের (রোল-১৫১৩২৩), এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আল মুজাহিদ আফ্রিদি (রোল-১৭১৩২৮), শহিদুল ইসলাম (রোল-১৭১৩১৪), রোকনুজ্জামান রোকন (রোল-১৭১৩০৫), অনুপ মালাকার (রোল-১৭১৩৩০) এবং শামীম বিশ্বাস (রোল-১৭১৩৩৭)।

একইসঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী (রোল-১৫১৩১৯), দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শতদল পাল (রোল-১৬১৩০২) ও ইমরান হোসেনকে (রোল-১৭১৩২০) চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে র‌্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনও কর্মকান্ডে জড়িত থাকবে না মর্মে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের আইনানুগ অভিভাবকরা এবং তিনি নিজে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার নামা না দিলে ওই তিনজন ছাত্রকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।

আপনার মতামত লিখুন :