আজ বহু প্রতিক্ষিত কালনা সেতুর উদ্বোধন
যশোর-নড়াইলসহ দক্ষিণাঞ্চলে বইছে আনন্দের বন্যা
আজ মধুমতি নদীর বুকে কালনা সেতুর উদ্বোধন। এটি দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আজ (১০ অক্টোবর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করবেন।
এদিকে রাতের দৃষ্টিনন্দন আলোয় কালনা মধুমতি সেতুর নান্দনিক স্থাপত্য শৈলী আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সেতুতে প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন। বর্ণাঢ্য আয়োজনে মধুমতি সেতু উদ্বোধন হবে।
আরও খবর-কালনা সেতুর উদ্বোধনে আনন্দের বন্যা
কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, মধুমতি সেতুতে ৮৪টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর দুই পাশে ৪০টি এবং বাকিগুলো টোল এলাকায়। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বিবেচনায় রেখে ল্যাম্পপোস্টগুলো সৌরশক্তির করা হয়েছে। ফলে সন্ধ্যা হলে বিদ্যুৎ ছাড়াই অটোমেটিক জ্বলে উঠছে ল্যাম্পপোস্টগুলো। এতে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মধুমতি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, যশোর, বেনাপোলসহ আশপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ৬ লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে।
এদিকে বহু কাঙ্খিত কালনা সেতুর উদ্বোধনের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে নড়াইল, যশোর, বেনাপোলসহ দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে। কালনা মধুমতি সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ হচ্ছে। মণিহার সিনেমা হল চত্বর থেকে নড়াইলের কালনাঘাট পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার সড়ক অপ্রশস্ত থাকায় কালনা মধুমতি সেতু চালু হলে এ সড়কে যানবাহনের চাপ সামাল দেয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন চালক ও যাত্রী সাধারণ।
যদিও ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কটি ২৪ ফুট করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে সড়কের দুই পাশে গাছকাটা শেষ পর্যায়ে থাকলেও প্রশস্তকরণের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা বলছেন মধুমতি চালুর মধ্যদিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করবে। কেউ চাইলে যশোর-নড়াইলের মানুষ বাড়ি থেকে ঢাকায় অফিস ও ব্যবসা বাণিজ্যের কাজ সেরে দিনেই বাড়ি ফিরতে পারবেন।
অর্থনীতি