কুষ্টিয়া বখাটের অত্যাচারে চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্য

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: বখাটেদের যৌন নির্যাতন ও হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুরে নবম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রী চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কয়েক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
হতভাগ্য চাঁদনী আক্তার মুন্নী মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি গ্রামের হেকমত আলীর মেয়ে। সে কেবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। শুক্রবার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মুন্নীর ময়নাতদন্ত করেন চিকিৎসকরা।
মুন্নীর চাচাতো ভাই সুজন জানান, তাদের এক চাচাতো বোনের বিয়ে ছিল গতকাল শুক্রবার। এ জন্য মুন্নী তার আরেক চাচাতো বোনকে নিয়ে পাশের আমলা বাজারে ফুল কিনতে যায়। এ সময় এলাকার বখাটে জয়নালসহ ৪-৫ জন তার পিছু নেয়। এ বখাটেরা তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত।
মুন্নীর চাচা হাসেম আলী বলেন, কাতলামারী এলাকার আরোবিয়ার ছেলে জয়নাল, আনছের আলীর ছেলে মিঠুন, রেজন আলীর ছেলে আঙ্গুর, নাসের রাজের ছেলে রাজু এবং আফতার আলীর ছেলে পারভেজ মুন্নীকে আমলা বাজার থেকে পাশের একটি খামারে নিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। পরে আমলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই আশরাফ মুন্নীকে উদ্ধার করে স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য রেজেলা খাতুনের কাছে হস্তান্তর করেন।
রেজেলা খাতুন জানান, পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তার কাছে হস্তান্তর করে। তিনি মুন্নীকে নিয়ে আসার সময় জয়নাল, মিঠুন, আঙ্গুর, রাজু, পারভেজসহ বেশ কয়েকজন মেয়েটিকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। এ সময় তিনি মেয়েটির বাবাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পরে মুন্নীর বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন জানান, বাড়ি ফিরে মুন্নী আত্মহত্যা করে। তার আগে সে চিরকুট লিখে যায়। সেখানে বখাটেদের অত্যাচারের বিষয়টি তুলে ধরেছে।
সকালে মুন্নীর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, মুন্নীর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে কি-না। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুল হালিম জানান, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
খুলনা বিভাগ