সুলতানা খান দিনার একগুচ্ছ কবিতা

এবিসি বাংলা ডেস্কএবিসি বাংলা ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  02:44 PM, 07 April 2019

অসুখ
……….

চাইনি আমি অসীম সুখ ভোগ,
চেয়েছিলাম অনাবিল আনন্দলোক,
বিধাতার ইচ্ছায় চলে এলো অসহনীয় অসুখ!
ভেবে নিলাম তাই, নাহি চাহি সুখ,
ঢেলে দাও বিধাতা যত আছে দুঃখ!
বিধাতা আমার মনের কান্নায় পাও তুমি এতই কি সুখ?
মনে রেখো লুকাবো না আমার দুঃখ গাঁথা মুখ।
কান্নার জলে অজানা দিনে খোঁজে নেব অসংখ্য সুখ।
তোমার পৃথিবীতে কষ্টের মাঝে জ্বলে পুড়ে
ছাই হবে না আমার বুক,
শত কষ্টেও ফিরাইবো না মুখ চাহি এমন অমৃত সুখ,
মনে রেখো বন্ধু, রয়েছে আমার অনাবিল ভালোবার বুক,
নাহি রবে মোর বিধাতার দেওয়া দুঃখ।
…………………………..

গ্রামের স্মৃতি
>>>>
গ্রাম অপুর্ব সুন্দরের চারন ভুমি
গ্রানের মানুষ অন্তরটা সবুজায়ন
গ্রামের অসাধারণ সব স্মৃতি
আজো বেজে উঠে কল্পনাতে।
ইট-পাথরের শহরের জীবনে
কোথায় পাবো মা মাটির গন্ধ।
সকালের সুর্যে ফসলের উপর
ভরে যায় মন প্রকৃতির তরে।
মেঠো পথের হাটার রাস্তায়
গাছগাছালির অপুর্ব সমাহার।
বিকালের দৃশ্য মন ছুয়ে যায়
সন্ধ্যা ঘনিয়ে নিরব রাত হয়।
নিঝুম রাত নেই কোন সারাশব্দ
কিযে ভালো লাগা নিভৃত ঘরে।
শেয়াল আরো কত কিযে ডাকে
ছন্দময়তার জীবনের স্বাদে।
গ্রাম ভালোবাসি অনন্য ছোয়ায়
যান্ত্রিক মানুষ পাবে কি ধরায়।
যান্ত্রিকতায় সবাই যেন যান্ত্রিক
অন্তরের ভালোবাসা একাপথিক
গ্রামের নিঝুম এক রাত যাপনে
হাজারো রাত শহরে নয় সমান।

…………………
ঝরা ফুল সেও বকুল

অসমাপ্ত কথাগুলো একটি গদ্যের সারাংশ
হয়ে প্রকাশিত হলে,গদ্যটি কি ছন্দ হারাবে?
গুনগুন গানগুলো কখনো সুর হারালে,
সে গান কি হারিয়ে যাবে?
কোন এক একাকীত্বের ভাবনায় এমনি-তো ভাবনা হয়!
কুড়িয়ে পাওয়া কাগজে,লিখা কবিতা নাই’বা আবৃত্তি হলো, তাতেও কি ঐ কবিতাগুলো আশাহত হবে,যদিও তাদের কাছে আপন হওয়া বড্ড কঠিন বাস্তবতা! দীর্ঘপথে হাতে-হাত রেখে পথচলা না’হয় অতীত স্মৃতি হয়ে রয়েযাবে অন্তপুরে। সে হাতটা হয়তো কোন এক নীরবতায় হাসির ছলে দেবে বলে,আমার জমানো সময় এখানেই সমাপ্ত!
তবুও থেমে না’থাকুক কষ্টদের বেঁচে থাকার সহজাত গদ্য, ছন্দহীন কবিতা,কষ্টগাথা গান। তবুও দূর হতে দূরে ভালো থাকুক হারিয়ে যাওয়া গুচ্ছ গুচ্ছ এলোমেলো স্বপ্নগুলো।

ছায়ামানবী
………………..
যদি কখনো একাকী সময় কাটে
বুঝে নিও আমার অধ্যায় নিঃসঙ্গ
ইচ্ছেঘুড়ি এলোমেলো দুরে কোথাও
কোন সে সুনয়না আমায় ভালোবেসে
দুঃখের প্রহরে সুখের ছোয়ায়
বিষন্ন হৃদয়ে এক মুহূর্ত স্পর্শে
আকাশনীলা তারার মেলায় তুমি
চিরন্তন ছায়ামানবী তুমি
ফুলেরা জানতো যদি আমার হৃদয়
ক্ষতবিক্ষত কতোখানি,
অঝোরে ঝরতো তাদের চোখের জল
আমার কষ্ট আপন কষ্ট মানি ।
নাইটিংগেল আর শ্যামারা জানতো যদি
আমার কষ্ট কতোখানি-কতোদুর,
তাহলে তাদের গলায় উঠতো বেজে
আরো ব হু বেশী আনন্দদায়ক সুর ।
সোনালী তারারা দেখতো কখনো যদি
আমার কষ্টের অশ্রুজলের দাগ,
তাহলে তাদের স্থান থেকে নেমে এসে
জানাতো আমাকে সান্ত্বনা ও অনুরাগ ।
তবে তারা কেউ বুঝতে পারেনা তা-
একজন,শুধু একজন,জানে আমার কষ্ট কতো;
আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে যে
ভাংগার জন্য-বারবার অবিরত ।
আমি চাই তোমাকে ছেড়ে যেতে,
পারিনি তাই বলে।
শতবার করেছি অপ্রান চেষ্টা, ততবার হয়েছি যে ব্যর্থ।
বিষাদের টানে প্রতিবার হয়েছি যে আকুল,
তাই আমি তোমার জন্য হই ততই ব্যাকুল।
একি সেই বিষন্নতা যে বার বার তোমার কাছে টানে,
তোমারি জন্য আমি হইয়াছি জাগ্রত।
তোমাকে দেখেই আমি শিখেছি পথ চলা,
তাই তো বিরহ মন মানে না কোনো বাধা।
নিঃশব্দ চলে যাব ধুমকেতুর মত দীর্ঘশ্বাস ফেলে
আসবো না আর সাধোযুগ পড়ে হাজার জনম ডাকো যদি ।
ঝিনকুটিরে প্রজাপতির সুখ তবুও থাকে না
তারা অন্যের প্রসাদে অনাআদর অপমানে ।
ক্ষুদ পাখায় উড়ে চলে সত্যের সন্ধানে ।
পবিএ বন্ধনে নিজেকে বিলীন করেছি।
তবুও দাওনি কখনো তার প্রতিদান ।
দিয়েছো মিথ্যা কলন্ক কালি এঁকে।
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে দেখেছো পৃথিবীকে তুমি ভালোবাসতে পারোনি।
সত্যকে কখনো করোনি কদর,
শুধু দিয়েছো নিতি বির্সজন ।
জানো তো প্রজাপতিরা মিথ্যেকে মেনে নিতে পারে না।
নিতি সাথে কখনো আপষ করতে জানে না ।
তবুও যদি হয় অপরাধী তবে হোক না তাদের সপ্নের সমাধী ।
তবুও মানবো না হার।
,অন্যায়ের কাছে করবো না মাথা নত ।
তোমাকে ভালোবাসবো বলে নয়,
তোমার কাছে আসবো বলে নয় ।
দেখবো কিভাবে ভালোবাসো নাকি,
আমার মত পৃথিবীকে তুমি ঠ্রকাবে ।
অমর অক্ষয় ধুমকেতু হয়ে নিঃশব্দে চলে যাবো ……?
……………………………………………..

মেঘলা দিনে

কোন এক মেঘলা দিনে তোমাকে আমি
বলেছিলাম চলো মেঘ আকাশ দেখবো ।
তুমি বললে মেঘলা আকাশ,
সে তো বড্ড উদাষী দেখলে খুব একা একা মনে হয় নিজেকে !
আমি তো একে নই তুমি তো আছো আমার পাশে ।
আমি উদাষহীণ ভাবে তাকিয়ে ছিলাম তোমার প্রাণে অনেকক্ষন ।
তুমি আসো নি সে দিন ।
আমি জানালার পাশে দাড়িয়ে ঠিকি একাকী মেঘলা আকাশ দেখেছি
আর তার সাথে কথা বলেছি ।
তোমার কথা, আমার কথা,আমাদের কথা !
মেঘলা আকাশে সাথে আমি এখনো কথা বলি ।
আমাদের প্রতিটি কথা হয় তোমাকে ঘিরে ।
শ্রাবণের এক বৃষ্টির দিনে তোমাকে আমি বলেছিলাম
চলো দু’জনে বৃষ্টিতে ভিজি ।
তখন তুমি বলেছিলে বূষ্টি তোমার বড্ড অপছন্দের ।
কেমন যেন দুঃখ দুঃখ ভাব,
তবুও অপেক্ষায় তেকে ছিলাম তোমার ।
এ ভেবে যে হঠাৎ এসে হাত ধরে বলবে চল আমিও বূষ্টিতে ভিজবো ।
তোমার জন্য আজও নাহয় বূষ্টিকে ভালোবেসে যাবো ।
তুমি আসোনি সেদিন,
আমি কিন্তু সেদিনে বূষ্টিতে একাই ভিজে ছিলাম ।
আর কেঁদে ছিলাম অজরে কেউ দেখেনি সে কাঁন্না শুনেনি কোন শব্দ ।
আমি আজও বূষটিতে ভিজি আর বার বার তোমাকে মনে করে কাঁদি ।শরৎতের কোন এক গোধুলী বেলায় তোমাকে আমি বলেছিলাম চলো আজ কাঁশফুল দেখবো ।
তুমি উদাষীন হয়ে বললে কাঁলফুল,সে তো শক্ত বন্ধনের বড় অভাব ।একটু খানি ছোঁয়া দিতেই পাপঁড়ি গুলো ঝড়ে পড়ে ।
বন্ধনহীন কোন কিছু আমার ভালো লাগে না ।আমি অনেক অনুরোধ করেছি তোমায় কারণ ফুল গুলো আমার বড় প্রিয় !
তুমি আসোনি সেদিন কাঁশফুল দেখতে ।
কাঁশফুল সেদিন একাই দেখেছি,আর ভেবেছি তোমার আমার বন্ধনটি ঠিক কাঁশফুলের মত ।
শরৎতের এ গোধুলী গুলোতে আজও আমি কাঁশফুল দেখি আর তাদের ঝড়ে পড়া দেখে বার বার তোমার কথা মনে পড়ে,
তোমাকে মনে পড়ে,
মনে পড়ে তোমার আমার কাঁশফুলের মত বন্দনের কথা !
ভালো থেকো প্রিয় কাঁশফুলের মত !!
আমার এ আকাশ দেখা ভাংঙা ঘরে তুমি পাশে থাকবে বলে ভালোবেসেছিলাম !আমার শৃণ্য হ্নদয়ে তোমার ছোঁয়া পাবো বলে তোমাকে ভালোবাসাছিলাম ।
হঠাৎ কোথায় হারালে কোন আকাশের নিচে,
কোন বাগিচায় ফুটাতে ফুল,আমায় স্বপ্ন দেখাতে মিছে !
আমি তো খুঁজেছি আকাশ পাড়ে,
চাঁদের দেশে নিরবে নিশিতে কত যে কেঁদেছি একা একা,
আমি তো খুঁজেছি সাগর পাড়ে ডুবরি হয়ে তবুও পাইনি তোমার দেখা ?
তুমি সুখী হও,সুখে থাকো !
কোন অচেনা আকাশের বুকে !
তোমার পথের কাঁটা আসবে না আর অশ্রু ছড়া চোখে,
অশ্রু ছড়া চোখে !!
……………………………

একটু তুমি খোজ নিলে না
……….

একটু তুমি খোজ নিলেনা তোমায় ছাড়া
কেমন কাটে অযুত নিযুত রাত,
একটু তুমি খোজ নিলেনা কেমন করে
তোমায় খোজে পাগল দুটি হাত…

কতোজনের ডাক শুনে যে নেমে আসে
অনেক দূরের সুন্দরী খুব পরী,
আমার ডাকে বন্ধ ঘরে ঘুমাও তুমি
একলা আমি ডেকে ডেকে মরি।

বালুর চরে যায় যে ডুবে এমন জীবন
সাগর থাকে অনেক দূরে সরে,
ঢেউয়ের পিছন ছুটতে গিয়ে পথ ফেলে যাই
সীমানা যে মিশে আছে তোমার শরীরে।

ইচ্ছে করে ভেঙ্গে দিলে মনের বাড়ি
কেমন করে আমি এখন মানবো তা,
মনের ভিতর গোপন রাখো ইচ্ছে সবই
কেমন করে আমি বলো জানবো তা।

আমি না হয় কম বুঝেছি সকল কিছু
তবে তোমার জানা ছিলো ঠিকই,
আমার এখন একলা থাকায় কষ্ট অনেক
আগের মতো তুমি আজও স্বাভাবিকই।

একটু তুমি খোজ নিলেনা তোমায় ছাড়া
কেমন এখন আমার সারা বেলা,
আজও তুমি আগেই মতোই করে গেলে
এই আমাকে ভীষণ অবহেলা।

কেমন যে আছো, কেমন যে থাক তুমি
কিছুতে হয় না জানা।
নিশিরাতে মন তোমার কেমন যে করে
কেমন-বা করে আউলা বাতাসে মন
জানি না তোমায় আমি কিছুতেই কিছু।

ভালোবাসার-গন্ধ বুকে কেমন যে থাকো একা
কেমন যে কাটাও প্রহর, বেলা
মেলিয়া করুণ চোখ তাকাও উদাস কোন্ দূরে
ঘুম ভেঙ্গে গেলে কখনো হঠাৎ
কার কথা মনে পড়ে যে তোমার
হয় না কিছুই জানা।

কিছুই হয়না জানা
কেমন যে আছো, কেমন যে থাক তুমি
ভালোবেসে ভেজা চোখে কীভাবে তাকাও
ওই বুকে কার জন্যে ভালোবাসা-নদী
কার জন্যে কষ্ট বুকের ভেতরে
না .. হয় না জানা কিছুতেই
কিছুতেই কিছু জানি না তোমায়।

আমি আজো তোমার অপেক্ষার প্রহর গুনছি,
জানি না কোন দিন আর ফিরে আসবে কিনা।
তোমার প্রতি আমার রাগ অভিমান কোনটাই ছিল না,
তবে এতটুকু জানি যতটুকু ছিল সব টুকুই ছিল ভালবাসা।

আমার জীবনের শেষ নিঃশাস পর্যন্ত,
আমি শুদু তোমারই জন্য অপেক্ষা করে থাকব।
জানি একদিন ভালবাসার টানে ছুটে চলে আসবে,
হয়তো বা সেই দিন আমি থাকব না।
থাকবে শুদু তুমি আর তোমার ভালবাসা,

ঢাকা বিভাগ

আপনার মতামত লিখুন :