রংপুরে কোচিং সেন্টারে ঝুকছে শিক্ষার্থীরা

রংপুর সংবাদদাতা: কোচিং সেন্টারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে রংপুরের শিক্ষার্থীরা। রংপুর নগরীসহ জেলার উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাথমিক-মাধ্যমিক ও মাদরাসা গুলোতে পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণীতে আশঙ্কাজনক হারে কমছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার।
এদিকে শিক্ষার্থীদের টানতে কোচিং সেন্টারের নানা স্লোগান সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে রংপুর নগরীসহ জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত পল্লীতেও।
এসব চটকদার বিজ্ঞাপনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আকৃষ্ট হচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিতির হার কমেছে, তেমনি মানসম্মত লেখাপড়া না হলেও অভিভাবকদের প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
সচেতন অভিভাবকরা জানিয়েছেন, রংপুর নগরীসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কোচিং সেন্টারে দিনরাত পড়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। একই অবস্থা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে আরও বেশি লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে হরেক নামের কোচিং সেন্টার। বাসাভাড়া নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বেশিরভাগ কোচিং সেন্টার। দিনরাত শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মেতে থাকে এলাকাগুলো। কোনো কোচিং সেন্টারে আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। নিয়মিত স্কুলে ক্লাস না করলেও কোচিং সেন্টারে থেকে তারা পড়াশোনা করে।
আরো পড়ুন >>>নেত্রকোনায় নলকুপ থেকে পানির বদলে উঠছে গ্যাস
পীরগাছা উপজেলার চৌধুরানী গ্রামের নুর বক্ত মন্ডল ও আজিজুল ইসলাম নামের দুই শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যালয়ে কম যাই। তবে কোচিং করি।
নগরীর আশরতপুরের আরিফা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, কোচিংয়ে না পড়লে স্কুলেও ভালো নম্বর পাওয়া যায় না। কারণ, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই এ কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত।
মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের নুর ইসলাম ও জাফরুল ইসলাম নামের দুই শিক্ষার্থী জানান, কোচিং সেন্টারে পড়ালেখা ভালো হয়। তাই প্রস্তুতিও ভালো। তবে অনেক অর্থ গুনতে হয়।
রংপুর নগরীর তামপাটের অভিভাবক আশরাফুল আলম ও ধাপ হাজী লেনের শহিদুল ইসলাম জানান, রংপুরের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে ভালো লেখাপড়া হয়। তবে ছেলেময়েদের বায়না মেটাতে কোচিং সেন্টারে দিতে হয়।
আরো পড়ুন >>>মণিরামপুরে এক মাসে জরা রোগে অর্ধশতাধিক গরুর মৃত্যু
রংপুর নগরীর আজিজুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোর কারণে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কম থাকে। অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানের বেতন বকেয়া রাখলেও কোচিংয়ের বেতন ঠিকই পরিশোধ করেন। কোচিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকি দেওয়ারও প্রবণতা বাড়ছে।
এব্যাপারে আমতলা বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এখন স্কুলের অনেক শিক্ষকই কোচিং সেন্টার খুলে ব্যবসা করছেন। তাদের কোচিং সেন্টারে না পড়লে শিক্ষার্থীদের ভালো নম্বর দেওয়া হয় না। এ কারণে ভয়ে তারা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নজরদারির প্রয়োজন।
বাংলাদেশ