যশোরে শিশু ছাত্রী হত্যায় প্রতিবাদের ঝড়:আটক ১

এবিসি বাংলা ডেস্কএবিসি বাংলা ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:32 PM, 05 March 2019

এবিসি নিউজ: শিশু ছাত্রী কথা আফরিন তিশা হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে শহরের ধর্মতলা এলাকার সাধারণ মানুষ ও তিশার স্কুলের সহপাঠিরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শহরের ধর্মতলা মোড়ে যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করে হত্যাকারীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।  এদিন মঙ্গলবার সকালে ধর্মতলায় মানববন্ধন চলাকালে পুলিশ সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করেছে। সোমবার রাতে প্রধান সন্দেহভাজন শামীমকে আটকের সংবাদ লোকমুখে শোনা গেলেও পুলিশ তার আটকের কথা অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে তিশা হত্যাকারীদের আটকের দাবি জানিয়ে ধর্মতলা মোড়ে অবস্থান নেয় শ’শ’ নারী পুরুষ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা ওই মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিশা হত্যাকারীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল কথা আফরিন তিশা।

আরও পড়ুন>>>পাকিস্তানে মাসুদের ভাইসহ ৪০ জঙ্গি গ্রেফতার

সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন চলাকালে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠে সব বয়সের মানুষ। বিক্ষোভ চলাকালে সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তাকে পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের দিকে এগিয়ে আসলে পুলিশ দ্রুত তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
কথা আফরিন তিশা শহরের কারবালা দি স্যালভেশন আর্মির পাশের গাজীপাড়ার মাজেদার বাড়ির ভাড়াটে ইজিবাইক চালক তরিকুল ইসলামের মেয়ে।

পড়ুন>>>যশোরের মণিরামপুরে গভীর রাতে পুলিশের সামনে সংখ্যালঘুর বাড়িতে তান্ডব

গত ৩ মার্চ বিকেলে সে বাড়ির পাশে খেলা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন ৪ মার্চ এলাকার হরশিতের বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে তিশার হাত মুখ বাঁধা বস্তাবন্দি অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তিশার পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসি সন্দেহ করে; তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়। হরশিতের ভাড়াটে শামীম নামে এক ব্যক্তিকে এই হত্যার জন্য সন্দেহ করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠায়। মঙ্গলবার সকালে লাশের ময়নাতদন্ত করেন চিকিৎসকরা।

আরও পড়ুন>>>বড়ভাইকে খুন করে ভাবিকে নিয়ে সংসারের ৩ বছর পর যুবক আটক
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের ফরেনসিক ডাক্তারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নিহতের শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। যৌনাঙ্গ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
তবে চিকিৎসকদের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, তিশাকে দুইজনে মিলে একাধিকবার গণধর্ষণ করা হয়। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলাচেপে শ্বাসরোধ করা হতে পারে।

জামায়াত নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের আইন পাস
তবে অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, আটক সাইফুল ও পলাতক শামিমসহ তিনজনে তিশাকে ধর্ষণ করেছে। ওই সময় তিশা চিৎকার দিতে গেলে তার মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল বসু বলেন, আমার স্কুলসহ অন্য কোনও শিশু যেন এমন নিষ্টুর নির্যাতনের শিকার না হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানববন্ধনের মাধ্যমে বিনীত আবেদন করছি, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। যাতে করে অন্য কেউ এমন অপকর্ম করার সাহস না দেখায়।
এদিকে, এ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি যশোর জেলার আহ্বায়ক ফরিদা পারভীন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক সেঁজুতি শাকিলা। নেতৃবৃন্দ শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমবেদনাও জ্ঞাপন করেন।
অন্যদিকে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব হাসান জানিয়েছেন, আসামিদের আটকের ব্যাপারে পুলিশ তৎপর। ধর্মতলা থেকে সাইফুল ইসলামকে আটকের বিষয়ে তিনি স্বীকার করেছেন।

খুলনা বিভাগ

আপনার মতামত লিখুন :