মণিরামপুরে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহিত গ্রেফতার

এবিসি নিউজ: যশোরের মণিরামপুরে কলেজ শিক্ষক সঞ্জয় হালদার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা মহিতুজ্জামানকে ওরফে মহিত মাস্টারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ রোববার রাত ১২টার পরপরই তাকে মনোহরপুর বাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরও পড়ুন>>>মণিরামপুরে টাকা চাওয়া নিয়ে বাড়িঘরে হামলা:আহত ১০
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সূত্রগুলো থেকে জানা যায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক জীবন যাপন করছিলেন। এরবাইরে তার বিরুদ্ধে এক মুদি দোকানী হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে বলে সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় রোজিপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী কুমরঘাটা বাজারে যান মশিয়াহাটী ডিগ্রি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সঞ্জয় হালদার।বাজার থেকে রাত ১০টার দিকে বাড়ির ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা সঞ্জয় হালদারের ওপর বোমা হামলা চালায়। বোমার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত সঞ্জয় হালদারকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরের দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ সঞ্জয়ের স্ত্রী বেহুলা হালদার বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মণিরামপুর থানার ওসি এস এম আলী আজম সিদ্দিকী ২০০৮ সালের ২৫ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরের ৩১ আগস্ট সোমবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।
রাযে মামলার ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিতুজ্জামান ওরফে মহিত মাস্টার (৩৫), রোজিপুর গ্রামের ভোলানাথ হালদারের ছেলে প্রসেন হালদার (৪২), মহেন হালদার (৪০) ও হিরামন হালদার (২৮), একই উপজেলার খাকুন্দি গ্রামের সরোয়ার সরদারের ছেলে আনিচুর রহমান (৩৫),মনোহরপুর গ্রামের আব্দুল সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান (২২), রোজিপুর গ্রামের বিকাশ হালদারের ছেলে বিধান হালদার (৪০)।
একইসঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।
এছাড়া অন্য এক ধারায় ৭ আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালতের বিচারক।
সব দণ্ড একইসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন বলে জানান ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক।
পরে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নেন। তাদের নিম্ম আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু আসামিরা ম্যানেজ ফর্মুলায় পলাতক জীবন যাপন করছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান।
এছাড়াও আটক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহিতুজ্জামান ওরফে মহিত মাস্টারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্প্রতি উপজেলার খাকুন্দি গ্রামের আতাউর রহমান নামে এক মুদি দোকানিকে হত্যা প্রচেষ্টা মামলা তার বিরুদ্ধে আটকাদেশ রয়েছে। জমিজমা সংক্রান্ত গোলযোগের সুত্র ধরে আতাউর রহমানকে হত্যা প্রচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে মণিরামপুর থানায় রাত ১টা ৫২ মিনিটে ০১৭৫৬৬০৮০৮৭ নম্বর মুঠোফোনে কল করা হলে রিসিভ করা হয়নি।
খুলনা বিভাগ