বেনাপোলে সবোর্চ্চ সতর্কতা জারি

ওমিক্রনের ধরন বিএফ.৭ উপধরণের সংক্রমণ বৃদ্ধি

এবিসি নিউজ>এবিসি নিউজ>
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:22 PM, 26 December 2022
বেনাপোলে সতর্কতা জারি

ওমিক্রনের ধরন বিএফ.৭ উপধরণের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার খবরে নড়েড়ে বসলো সরকার। এরমধ্যে বেনাপোল চেকপোস্টে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। যদিও বাস্তবে; বন্দরে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বাড়লে বালাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কায় সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক চিঠিতে বন্দর এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল।

 

চিঠিতে বলা হয়েছে, চীন-ভারতসহ বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ওমিক্রনের এই উপ-ধরন শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। একারণে বাংলাদেশে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থায় নতুন ধরনকে ‘অত্যন্ত সংক্রামক’ উল্লেখ করে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা।

 

সূত্রের দাবি-আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে ভাইরাসটি যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রাজিল, জার্মানিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাপারে হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। সব সন্দেহজনক যাত্রীকে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

 

২৫ ডিসেম্বর বিকেলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মেইলে সতর্কতা জারির নির্দেশ পাওয়ার পর বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে স্থাপিত ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার কার্যকর করা হয়েছে। যা করোনার সময় থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে শার্শা স্বাস্থ্য বিভাগ।

 

সোমবার ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের তল্লাশি কেন্দ্রের মধ্যে ও ইমিগ্রেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। যাদের মাস্ক আছে, তাদের মাস্ক ঝুলছে মুখের নিচেই। বিষয়টি ধরা পড়েছে গণমাধ্যম কর্মীদের চোখে। ক্যামেরা দেখে অনেকেরই মাস্ক পরতে দেখা যায়। তবে ভারত থেকে আসা পাসপোর্টযাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা গেছে।

 

বেনাপোল চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়-মাস্ক, পিপি ছাড়াই ভারতীয় ট্রাকচালকরা অবাধে ঢুকছেন বন্দরে। তাদের কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকে জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রমও।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা হয়েছিল। এরমধ্যে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরফলে স্থানীয়দের মধ্যে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

 

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে বেনাপোল বন্দরের রেল ও সড়কপথে বড় ধরনের বাণিজ্য কার্যক্রম আর পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত। প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে। এছাড়া এ চেকপোস্ট দিয়ে বছরে প্রায় ১৮ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। আমদানি পণ্য নিয়ে প্রতিদিন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রায় সহস্রাধিক ট্রাকচালক আসছেন বেনাপোল বন্দরে। বেনাপোল বন্দর থেকে ৩ শতাধিক ট্রাকচালক রপ্তানি পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে। পণ্য খালাসে শ্রমিক, ট্রাকচালকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রতিদিন সমাগম হয় বেনাপোল বন্দরে।

 

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলী গণমাধ্যমকে জানান, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার মেশিনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। চেকপোস্টে পাসপোর্টযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি মেডিকেল টিম কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন-চেকপোস্টে স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো স্থায়ী অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় তাদের কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জনবলের অভাবে বন্দরেও কাজ করতে পারছেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সমস্যা সমাধানের জন্য জানানো হয়েছে। দ্রুতই সুরাহা হবে বলেও আশা করেন এই চিকিৎসক।

বাংলাদেশ

আপনার মতামত লিখুন :