পহেলা বৈশাখ উদযাপনে যশোরে নানা প্রস্তুতি

এবিসি নিউজ: বৈশাখ সমাগত। পহেলা বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্যের বার্তাবাহি দিন। দিনটি দেশজুড়ে উদযাপিত হবে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহি এই দিনটিকে মহাসমারোহে উপভোগ করেন বাঙালি। যশোরবাসীকে আনন্দ দিতে বসে নেই সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। বৈশাখি উৎসব উদযাপনের জন্য আঁটঘাঁট বেঁধে নেমেছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
বৈশাখ মাসের এই পয়লা দিনটি বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্যাপনের জন্য সংগঠনটিতে দিনমান চলছে নাচ, গান, কবিতা, নাটক ও আবৃত্তি চর্চা। পয়লা বোশেখের অনুষ্ঠানে নাচ, গান, ছড়া,কবিতা ও নাচের পাশাপাশি দুটি গীতিনাট্য প্রদর্শন করবে শেকড়ের শিল্পীরা। এসব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সফল করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শেকড়ের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। পয়লা বৈশাখের দিন দুপুর তিনটায় শহরের মুজিব সড়ক রোডে ওয়াইডব্লিউ সিএ স্কুল আঙিনায় বৈশাখি উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। শেকরের দেড়শ শিল্পী উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে।
এদিন বৈশাখের ভর দুপুরে কড়াচড়া রোদে ঢাক, ঢোলের বাদ্য ও রাখালিয়া বাঁশির সুরের সাথে বাতাসে আবির ছড়িয়ে, খই, বাতাসা ছিটিয়ে বাঙলা নতুন বছরটিকে আহবান জানাবে শেকড়। এসময় নববর্ষকে স্বাগত জানাতে উৎসব মঞ্চে জ্বালানো হবে মঙ্গলপ্রদীপ। এরপরপই বাঙালির প্রাণের পুরুষ রবি কবির লেখা ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে/ এ জীবন পুণ্য কর দহন-দানে/ আমার এই দেহখানি তুলে ধরো/ তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো/ নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে….’ এই গানটি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেকড়ের বৈশাখি উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু হবে। সংগঠনের ছেলেরা একই রঙের পাঞ্জাবি ও মেয়েরা একই ধরণের শাড়ি পড়ে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে।
সংগঠনটির বৈশাখি অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যের পাঁচ গীতিকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দীন, অতুল প্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের গান প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাশু। এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় থাকবে দলীয় নৃত্য, একক ও সমবেত সংগীত। পাশাপাশি হারানো দিনের বাঙলা গানের পাশাপাশি লোকজ সংগীত পরিবেশনায় থাকবে। এর পাশাপাশি পরিবেশিত হবে দুটি গীতি আলেখ্য পঁচাত্তর বঙ্গাব্দ ও আলোর মিছিল পরিবেশিত হবে।
তিনি আরো জানান, এক সময় মানুষের বিনোদনের একটা মাধ্যম ছিল বায়োস্কোপ। শেকড়ের এবারকার বৈশাখি উৎসব মঞ্চে জব্বার মিয়ার বায়োস্কোপ নামে একটি পর্ব থাকবে। হিরো আলম, বাল্য বিয়ে বর কনে, ঘটকসহ গ্রাম বাঙলার নানান চরিত্রের মানুষ হাজির হবে বায়োস্কোপে। এছাড়া উৎসবে পট গান গাজী কালু চম্পাবতীর উপাখ্যান ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসনমূলক নাটক বুড়ো শালিকের ঘারে রোঁ নাটক মঞ্চায়ন হবে।
বরাবরের মতন এবারও বৈশাখি নববর্ষের দাওয়াতপত্রে বৈচিত্র এনেছে সংগঠনটি। শেকড়ের এবারের ১৪২৬ বঙ্গাব্দের নববর্ষ অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্রটি হলো বিয়ের ছাদনাতলা (বিয়ের বেদি)। বাঁশ, কাঠ ও মোটা কাগজ দিয়ে তৈরি বিয়ের এই ছাদনা বর ও কনের পাশাপাাশি থাকবে একটি বিয়ের পিঁড়ি ও চারটি কলা গাছ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈশাখে যশোরবাসীকে মাতিয়ে রাখতে অনেকগুলো সাংস্কৃতিক সংগঠন দিন-রাত রিহাসেল করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও যশোর মেতে উঠবে বাংলা নববর্ষে-সেই প্রস্তুতি চলছে ঘরে ঘরে।