ডিবি পরিচয়ে গাড়িতে উঠতে বললে উঠবেন না-হারুন অর রশিদ

জোর করে গাড়িতে তোলা হয়; এক্ষেত্রে করণীয় কী-প্রশ্ন সচেতন মহলের

এবিসি বাংলা ডেস্কএবিসি বাংলা ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:55 PM, 02 January 2023
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেউ গাড়িতে উঠতে বললে উঠবেন না। অপহরণকারীচক্র ডিবি পরিচয়ে বিপদে ফেলতে পারে। ইদানিং ঘটনাটি  আতঙ্কের রুপ নিয়েছে। কেউ নিখোঁজ হচ্ছেন, কাউকে পাওয়া যাচ্ছে; কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় সবকিছু কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছে। এভাবেই জনসাধারণকে সতর্ক করলেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

 

 

সোমবার (২ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অনুরোধ জানান। ভুয়া ডিবি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

রবিবার (১ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এই পাঁচজনকে। তারা হলেন পিযুষ সুর (২৭), হারুন (৩৮), জোবায়ের হোসেন পারভেজ, আরিফ হোসেন (২৯) ও খোকন চন্দ্র দেবনাথ (৪২)।

এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি কালো রঙের নোয়াহ্ মাইক্রোবাস, একটি সাদা রঙের প্রভোক্স প্রাইভেটকার, দুটি পুলিশের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট ও একটি হ্যান্ডকাপ জব্দ করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাতে এক ভুক্তভোগী রিকশায় করে মতিঝিল সিটি সেন্টার পার হয়ে অলিম্পিয়া বেকারির দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি কালো রঙের নোয়াহ গাড়ি তার গতিরোধ করে।

এরপর ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার কাছে অবৈধ মালামাল আছে বলে দুই হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তাকে গাড়িতে তোলা হয়। তার সঙ্গে থাকা চার লাখ ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় তারা।

পরে ওই ব্যক্তিকে রাজধানীর শাপলা চত্বর, ধোলাইপাড় টোলপ্লাজা, ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা কুচিয়ামারা ব্রিজ ঘুরিয়ে ঢাকা-মাওয়া সড়কে পিডিএল ক্যাম্পের সামনে নামিয়ে দিয়ে মাওয়ার দিকে চলে যায় মাইক্রোবাসটি।

হারুন অর রশীদ বলেন, ভুক্তভোগী এ বিষয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশের পাশাপাশি ডিবিও ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই নোয়াহ্ গাড়িটি উদ্ধার করা হয় ঢাকার পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে। গাড়ির মালিক ও ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় আসামিদের।

ডিবিপ্রধান বলেন, এ চক্রটি পারস্পরিক যোগসাজশে প্রাইভেটকার নিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিকপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে ঘোরাফেরা করে। এরপর ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসা, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বের হওয়া এবং মানি এক্সচেঞ্জের ব্যক্তিদের টার্গেট করে চক্রটি। এরপর ওই ব্যক্তির পেছনে পেছনে গাড়ি নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে ব্যারিকেড দেয়। তখন নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয়।

এরপর ভিকটিমের সঙ্গে থাকা টাকা ও মূল্যবান মালামাল কেড়ে নিয়ে সুবিধাজনক নির্জন স্থানে ফেলে যায়। এ চক্রটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এ চক্রের প্রধান শহীদুল ইসলাম মাঝি। তার বিরুদ্ধে সারাদেশে ১৬টি মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবিপ্রধান। পলাতক শহীদুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

চক্রটির বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ডিবি পরিচয় দিয়ে গাড়িতে উঠতে বললেই কেউ গাড়িতে উঠবেন না।

এ বিষয়ে সচেতন মহল বলছেন-ডিবি বা পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে উঠতে বলে, বিষয়টি তা নয়। জোর করে গাড়িতে তোলা হয়। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর করণীয় কী তা জানা সবচেয়ে বেশি জরুরী।

আপনার মতামত লিখুন :