চাকুরিজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে ফেসে গেলেন ঝিনাইদহের ৭ পুলিশ

>>>দোষি পুলিশ সদস্যদের বর্তমান অবস্থান ও যাবতীয় তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দিলেন আদালতের বিচারক
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের অমিত শিকদার নামে এক চাকরিজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ৭ পুলিশ সদস্য’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিদের্শ দিয়েছেন ঝিনাইদহ আদালত। আগামী ২৯ এপ্রিল তারিখের মধ্যে দায়ি পুলিশ সদস্যদের সকলের বর্তমান অবস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা আদালতে সরবারহ করারও নির্দেশ দিয়েছেন ঝিনাইদহের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম। দায়ি পুলিশ সদস্যরা হলেন, কালীগঞ্জ থানার ২০১৬ সালে কর্মরত এস আই লিটন কুমার, এসআই বিশ্বজিত পাল, এএস আই গাফফার, ২ জন কনস্টেবল, ওসি ও ডিউটি অফিসার।
আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলার চাকরিজীবি অমিত শিকদার ও কার্তিক বিশ্বাস রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা কাশিপুর রেলগেট এলাকায় পৌঁছালে ডাইরি এন্ট্রি না করে বের হওয়া কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল তাদের পথরোধ করে দেহ তল্লাসী করে। তল্লাসী শেষে ২ জন কনস্টেবল অমিত শিকদারকে নসিমনে করে থানায় নিয়ে আসে এবং কার্তিক বিশ্বাসকে মোটরসাইকেলে থানায় নিয়ে আসে এএস আই গাফফার। রাতভর অমিত শিকদার ও কার্তিক বিশ্বাসকে থানায় আটকে রাখা হয়। পরদিন সকালে ৫২১ ও ৫২৯ নম্বর ডাইরি এন্ট্রি করে এবং কার্তিক বিশ্বাসকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই দিন থানায় কর্মরত এসআই লিটন কুমার বিশ্বাস মিথ্যা জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে ইয়াবা দিয়ে অমিত শিকদারকে চালান দেয়। মামলা নং-৫, তারিখ-১১/০৩/১৬।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিশ্বজিত পাল স্বাক্ষীদের ১৬১ ধারায় মনগড়া জবানবন্দী রেকর্ড করে ও মনগড়া পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মামলাটির বিচারে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় অমিত শিকদার ষড়যন্ত্র মুলক মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিকার চেয়ে আদালতে দরখাস্ত জমা দেন। দরখাস্তটি মিস মামলা হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আদালত মিস মামলাটির তদন্ত করতে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাসকে দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)।
তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার পর আদালত ঝিনাইদহের পুলিশ সুপারকে ওই ৫ পুলিশ সদস্য, সেই সময়ে অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ও ডিউটি অফিসার মাজেদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এছাড়াও অধিকতর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চলতি মাসে ২৯ তারিখে ৭ জনের বর্তমান অবস্থান ও স্থানীয় ঠিকানা আদালতে জমা দেয়ারও নির্দেশ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসআই লিটন কুমার, এসআই বিশ্বজিত পাল বর্তমানে র্যাবে, এএস আই গাফফার দামুড়হুদা থানায় কর্মরত আছেন। এছাড়াও সে সময় ওসি আনোয়ার হোসেন ছুটিতে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেকেন্ড অফিসার এস আই ইমরান বর্তমান ডিএসবিতে ওসি হিসাবে কর্মরত আছেন।
খুলনা বিভাগ