চলে গেলেন কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ:প্রধানমন্ত্রীর শোক

এবিসি বাংলা ডেস্কএবিসি বাংলা ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:16 PM, 06 April 2019

>>>টেলি সামাদের মৃত্যুতে এবিসি অনলাইন এক্টিভিস্ট ইউনিটের শোক
ঢাকা অফিস: চলচ্চিত্রে অভিনয়ে মানুষকে হাসিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা আবদুস সামাদ চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার মৃত্যু হয়েছে তার। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

আবদুস সামাদ ‘টেলি সামাদ’ হিসেবেই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন; টেলিভিশন থেকে চলচ্চিত্রে পা রাখায় তার এই নাম হয়ে যায়, যা তিনি নিজেও আর বদলাননি।

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সামাদ। শুক্রবার অবস্থা গুরুতর হলে তাকে নেওয়া হয় স্কয়ার হাসপাতালে। শনিবার দুপুর দেড়টায় চিকিৎসক এই অভিনেতার মৃত্যু ঘোষণা করেন বলে হাসপাতালে যোগাযোগ করে জানা যায়।

স্কয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. কামাল পাশা জানান, ‘শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। শনিবার সকালে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

স্কয়ার হাসপাতালে ডা. প্রতীক দেওয়ানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন টেলি সামাদ।

হাসপাতালে টেলি সামাদের মেয়ের কান্না হাসপাতালে টেলি সামাদের মেয়ের কান্না
হাসপাতাল থে‌কে সন্ধ্যায় টে‌লি সামা‌দের মর‌দেহ তার বাসায় নেওয়া হ‌বে। প‌শ্চিম রাজাবাজার জা‌মে মসজি‌দে মাগরিবের পর জানাজা হ‌বে।

রোববার সকাল ১১টায় এফ‌ডি‌সি‌তে আরেকটি জানাজা শেষে মু‌ন্সিগ‌ঞ্জের নয়াগাঁওয়ে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে টেলি সামাদকে সমা‌হিত করা হ‌বে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন এ অ‌ভি‌নেতার ছে‌লে দিগন্ত।

এদিকে টেলি সামাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ডিসেম্বর মাসে বুকে ইনফেকশন নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন টেলি সামাদ। তখন আইসিইউতেও ছিলেন কিছু দিন।

টেলি সামাদকে এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাইপাস সার্জারি করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। কিন্তু দেশে আসার পর অক্টোবর ও নভেম্বরে দুই দফা স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।

অসুস্থ টেলি সামাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে তার চিকিৎসায় উদ্যোগী হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে এই অভিনেতার হাতে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলছেন হুইলচেয়ারে বসা টেলি সামাদ (ফাইল ছবি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলছেন হুইলচেয়ারে বসা টেলি সামাদ (ফাইল ছবি)
মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠ নয়াগাঁও এলাকার সন্তান সামাদ। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা সামাদ তার বড়ভাই চারুশিল্পী আব্দুল হাইকে অনুসরণ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়।

১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন সামাদ। গত চার দশকে ৬০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জিরো ডিগ্রী’।

কমেডিয়ান হিসেবে দর্শক টেলি সামাদকে চিনলেও প্রায় ৪০টির বেশি চলচ্চিত্রে গানও গেয়েছেন টেলি সামাদ। ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনাও করেন তিনি।

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অভিনেতা টেলি সামাদের চাচা।

অন্যদিকে দেশের প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদের প্রয়ানে শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবিসি অনলাইন এক্টিভিস্ট ইউনিটের নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সুনীল ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক সমর ভৌমিক, সহ-সভাপতি আজম খান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সামসুল আলম, সহ-সভাপতি আহাজার মাহমুদ, সহ-সভাপতি মমতাজ পারভীন লিপি, ভাস্কর মনি সরকার, প্রতিভাময়ী মন্ডল, সুলতানা খান দিনা, রানা সিকদার, চন্দন দেবনাথ প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কৌতুক অভিনেতা হিসেবে টেলি সামাদের বিশ্বজুড়ে রয়েছে সুখ্যাতি। তার মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্র জগতেও অপুরণীয় ক্ষতি হলো।

বাংলাদেশ

আপনার মতামত লিখুন :