কালের পরিক্রমায় প্রায় বিলুপ্ত বাবুই পাখির বাসা

আব্দুর রহিম রানা: কবি রজনীকান্ত সেন এর ভাষায় বলতে হয়, “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়ু–ই, কুড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই, আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকার পরে,তুমি কত কষ্ট পাও রোদবৃৃুষ্টি ঝড়ে”। তাইতো কবি তার ভাষায় চড়ু–ই আর বাবুই কে নিয়ে অসাধারণ কবিতা লিখে গেছেন।
তবে সেই তালগাছ আর সে দিনের মত নেই । চির চেনা এই ঐতিহ্যবাহী তালগাছ বিলুপ্তের পথে। সে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই ও বাবুই পাখির বাসা।
ছোট্ট পাখি বাবুই ! শহরে বা গ্রামের মাঠে প্রান্তরে তালগাছ দেখলেই চোখে পড়ত বাবুই পাখির বাসা। খুব সুন্দর দৃষ্টি নন্দন এক শৈল্পিক কারুকাজ খচিত বাবুই পাখির বাসা। তালগাছের পাতাই পাতাই হেলে দুলে থাকে তা দুর থেকে আরও বেশি দৃষ্টি নন্দন হয়। এ সব বাসা গুলো তাল গাছের পাতাই বেশি তৈরী করে। গাছের পাতা থেকে কিছুটা নিচে ঝুলে এসেই তৈরী হয় বাবুই পাখির বাসা। অত্যান্ত নিপুন হাতে গড়া কাঁচা বাসা। বাবুই নামটি যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর তার বাসা ও শরীরের গঠন। তাদের এই শৈল্পিক কারু কাজ পূর্ণ দৃষ্টি নন্দন কাঁচা বাসা দুর থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে । দেখলে হৃদয় ছুয়ে যায়। দেখতে সুন্দর কিন্তু অলস আরাম প্রিয় ও পরোভোগী প্রকৃতির চড়–ই পাখি। এদের বসবাস পরের বাড়িতে বিভিন্ন চিলেকোঠায় । তাল গাছআর বাবুই পাখির বাসা যেন একে অপরের সাথে কত মিল।গ্রাম বাসি এ প্রতিবেদক কে জানান চৈত্র মাসে তালগাছে বাবুই পাখির বাসায় আসে আর জ্যৈষ্ঠ মাসে তারা বাসা ছেড়ে চলে যায়। কালের অবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে নাম না জানা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। আমাদের প্রকৃতির মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কি মিষ্টি মধুর পাখির কলোকাকলীর কন্ঠ আর মনোরম দৃশ্যপট।
যুগে যুগে কত কবি, সাহিত্যিকরা প্রকৃতির উপর নানান কথা লিপিবদ্ধ করেছেন। কত গল্প কবিতা ইত্যাদি সব। আজ এই দিন গুলির সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মিলের গরমিন হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরা এসবগুলো রুপকথার গল্পের মতোই হবে। তাদের ঐসবের কোন ধারনাই থাকবে না। পৃথিবীর বুকে প্রকৃতির এক অপরুপ সুন্দর মনোরম দৃষ্টি নন্দন বাবুই পাখির বাসা।বাবু পাখি তালপাতার আগার দিকের শেষ অংশের ঝুলে শূন্যের উপরে বাসা তৈরী করে যা বাতাসে দুলতে থাকে আর দৃষ্টি নন্দন করে। প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি বাতাসে তালগাছের বড় বড় পাতা গুলো বিভিন্ন ঝুকি থেকে বাচাতে সাহায্য করে। তার পরও প্রকৃতিতেই মনোরম দৃশ্যটি কেবল তালগাছে শুভা পাই। তাইতো কবির দৃষ্টি মনোভাবনালেখনি ঠিক বই য়ের পৃষ্ঠাতেই আছে। কিন্তু আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা। বাবুই,চড়–ই ও তালগাছকে নিয়ে এই অসাধারণ কবিতা, কবি ভাষায় মনোমুগ্ধ হয়েছে। আগামী প্রজন্ম যখন কবিতাটি পড়বে। তার বাস্তবতাই খুজে পাবে না। বিলুপ্ত প্রায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাহি বাবুই পাখির বাসা, তালগাছ ও চড়–ই পাখির বাসা।
ফিচারস top