আশাশুনিতে ছাত্রলীগের মারপিটে মুক্তিযোদ্ধা পুত্রের মৃত্যু

আশাশুনি(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: কারাগার থেকে বাড়ি ফেরার পর মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল প্রতিবেশি পরিচিত জনরা। কিন্তু মিষ্টির বদলে পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে গেলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচদিনের মাথায় তাকে চল যেতে হলো না ফেরার দেশে। তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান যুবলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ সানা। এঘটনায় নিহতের বোন ৬জনকে অভিযুক্ত করে থানায় এজাহার দিয়েছেন। এজাহারে দাবি করা হয়েছে ছাত্রলীগের মারপিটে তৌহিদ নিহত হয়েছে।
এদিকে পুলিশ খুনিদের বিষয়ে উদাসীনতা দেখিয়ে বলছেন নিহতের বিরুদ্ধে ২২টি মাদক মামলা ছিল। হত্যার ঘটনায় তার বোন রিনা রহমান ৬জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দিয়েছেন। তৌহিদ সানা আশাশুনির বড়দল গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক সানার ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাতে খুলনার হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামে নিয়ে আসা হয়। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। পুলিশ লাশটি ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয সূত্র জানিয়েছে, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি তৌহিদ সানার বিরুদ্ধে থানায় একটি মাদক মামলা হয়। এই মামলায় মাস তিনেক আগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ১ এপ্রিল জামিনে জেল থেকে মুক্ত হন তৌহিদ।
তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, বাড়ি ফেরার পর তৌহিদ বড়দল বাজারের একটি দোকানে বসা ছিলেন। এ সময় তার পরিচিত প্রতিবেশি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ রানা বাবু সন্ধ্যার দিকে তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর নাহিদ তার সহযোগী কাজল সানা, আইউব আলি মালি , টুটুল সানা ও ইয়াসিন সরদার তার ওপর হামলা করে । তারা তাকে লোহার রড, হাতুড়ি ও লাঠিসোটা দিয়ে বেপরোয়াভাবে মারপিট করতে থাকে। জীবন বাঁচাতে তৌহিদ দৌড়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল আলিমের বাড়িতে পৌছে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার বেসরকবারি হাসপাতালে । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় তার।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে তৌহিদ স্থানীয় মাদকসেবীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিল। এ কারণে তাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে এবং সেই টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করে। তারই প্রেক্ষিতে নাহিদ ,কাজল,আইউব, ইয়াসিন ও টুটুল সানা ক্ষিপ্ত ছিল্ । তারাই তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, তৌহিদ সানা ২২টি মাদক মামলার আসামি। গত বছর অক্টোবর সাসে সে গ্রেফতার হবার পর গত ২৬ মার্চ জামিনে বাড়ি আসে। এ দিন তাকে কয়েক যুবক পিটিয়ে আহত করে। ওসি আরও জানান তৌহিদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এঘটনায় ক্ষমতাসীন দল দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে দলটির সিংহভাগ নেতাকর্মীর ভেতর। তাদের দাবি, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
শীর্ষ খবর