আজ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসবে প্রায় ২১ লাখ শিক্ষার্থী

আজ রোববার ৩০ এপ্রিল চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এবার ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী।
এদিন সকাল ১০টায় বাংলা ১ম পত্রের মাধ্যমে এই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে; পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে হলে ঢুকতে হবে।
নয়টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। দেশের ৩ হাজার ৮১০ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্রে থেকে এবার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী দেশের বড় এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
মহামারীর আগে সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হত। করোনাভাইরাস ও বন্যার কারণে সাত মাস পিছিয়ে ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এপ্রিলে নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল সরকার।
এই পরীক্ষা ঘিরে মঙ্গলবার ‘জাতীয় মনিটরিং ও আইন শৃঙ্খলা’ সংক্রান্ত কমিটির সভায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার তুলে ধরা হয়।
এতে জানানো হয়, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী এর পরে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে, তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কোন সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ম অনুযায়ী খুলবেন।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ (পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শ্ন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা ও উপজেলা পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ব্যতীত অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
বরাবরের মতো কেন্দ্র সচিব ছাড়া কেন্দ্রে অন্য কারও মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি নেই।
কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না।
প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার দেওয়া হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্নপত্র বের করে পুলিশ প্রহরায় সকল সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।
ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরাও কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এমন কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
শিক্ষা বোর্ডসমূহের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো অনলাইনে সার্বক্ষণিকভাবে তথ্য আদান প্রদান করবে।
পরীক্ষা উপলক্ষে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এর বাইরে প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্নফাঁসের গুজব রোধে ফেইসবুক, মোবাইল ব্যাংকিং ও বিজিপ্রেসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর বিটিআরসির ও গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার।
এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ বলেছে, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্তরা এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য বরাবরের মত শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ এবারও থাকছে। এছাড়া, অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম এবং সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত পরীক্ষার্থীসহ শ্রবণ থেকে শুরু করে সব প্রতিবন্ধী অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে পরীক্ষায়।
বাংলাদেশ