অরিত্রির আত্মহত্যায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষসহ দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট

ঢাকা অফিস: ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে (১৫) আত্মহত্যার প্ররোচণা দেয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তৎকালীন স্কুল শাখার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী (স্কুল) শাখার প্রধান জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিলো মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পড়ুন>>>অরিত্রির আত্মহত্যা: বৃহস্পতিবার ‘ভিকারুননিসায় যা ঘটলো’

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে পল্টন থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী কামরুল ইসলাম এই চার্জশিট দাখিল করেন। অপরদিকে মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।

পল্টন থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জালাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় শিক্ষার্থী অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভিকারুননিসার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।

ঘটনার পরদিন রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে বলা হয়, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। ২ ডিসেম্বর (২০১৮) সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের (বাবা-মা) ডেকে পাঠায়। ৩ ডিসেম্বর স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে (বাবা) অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত পেয়ে (অরিত্রি) আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।

সচেতন মহলের দাবি ঢাকার বিতর্কিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জুলুমবাজি দুর্নীতি ও খামখেয়ালীপনার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি তারা কোন রকমের আলাপ আলোচনা ছাড়াই মাসিক বেতন ২০০ টাকা বৃদ্ধি করে মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে। এনিয়ে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তারা বলছেন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীণ হওয়ার পরও ডোনেশনের নামে স্কুলটি জন্মলগ্ন থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করে আসছে।

এরই মধ্যে অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

শিক্ষা সচেতন মহলের দাবি, মামলাটি দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।